প্রেস বিজ্ঞপ্তি:
মুন্সিগঞ্জের মুক্তারপুর এলাকায় পরকিয়া প্রেমে বাধা দেয়ায় স্বামী জাহিদুল মোল্লা হত্যাকান্ডের এজাহারনামীয় আসামী স্ত্রীর কথিত প্রেমিকের সহযোগি ইমনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১। রবিবার ( ২০ এপ্রিল ) ভোর ৪টায় মুক্তারপুর এলাকা হতে আসামী ইমনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত ইমন মুন্সিগঞ্জের আদারিয়াতলা মস্তিবাড়ি এলাকার আলী হোসেনের ছেলে।
গত বছরের ১৪ অক্টোবর মুক্তারপুর এলাকায় একটি হত্যার ঘটনা ঘটে। উক্ত ঘটনায় ভিকটিম এর বোন বাদী হয়ে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন, যার মামলা নং-২৯/১৪২, তারিখ- ১৯ এপ্রিল ২০২৫ ইং ধারা- ৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০।
ঘটনা সূত্র ও এজাহার পর্যালোচনায় জানা যায় যে, নিহত ভিকটিম বরিশাল আগৈলঝাড়া থানাধীন উত্তর চাঁদত্রিরিশা এলাকার মৃত.শহিদ মোল্লার ছেলে জাহিদুল মোল্লা (৪০),এর সাথে প্রায় ১৭ বৎসর পূর্বে ১ নং বিবাদী নুপুর (৩২) এর বিবাহ হয়। বিবাহিত জীবনে ভিকটিমের ১ মেয়ে, যাহার নাম সামিয়া (১৬) এবং ০১ ছেলে, যাহার নাম আহাদ (১১)। প্রায় ১০/১১ বছর পূর্বে ভিকটিমের স্ত্রীর সাথে এজাহারনামীয় ২ নং আসামী এমদাদুল (৪৫) এর সাথে পরকিয়া সম্পর্ক হয়। ভিকটিম তার স্ত্রীকে উক্ত আসামীর সাথে হাতেনাতে অশালিন অবস্থায় ধরে। তথাপিও ভিকটিম তার ছেলে মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তার স্ত্রী নুপুর (৩২) এর সাথে ঘর সংসার করতে থাকে। ইতোমধ্যে ভিকটিমের কন্যা অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে অন্তঃস্বত্তা হলে গোপনে ভিকটিমের স্ত্রী ভিকটিমকে না জানিয়ে তার মেয়ের গর্ভের বাচ্চা নষ্ট করে। এই ঘটনার বিষয়টি ভিকটিম জানতে পারায় ভিকটিম তার স্ত্রীকে বকাঝকা করায় ভিকটিমের স্ত্রী গত ৩১/০৫/২০২৪ তারিখ তাকে ডিভোর্স দেয়। ভিকটিমের খালু মোঃ খোকন পুনরায় বিয়ের মাধ্যমে উভয়কে মিলিয়ে দেয়ার পর তারা পুনরায় ঘর সংসার করতে থাকে। এরপরেও ভিকটিমের স্ত্রী পুনরায় পরকিয়া সম্পর্ক বজায় রাখে যা পুনরায় ভিকটিম তাদেরকে হাতেনাতে ধরে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৪/১০/২০২৪ রাত ৮টায় ভিকটিমকে ০৩ নং বিবাদী আল আমিন মোবাইলে ভিকটিমের ভায়রার ছেলে হামিম (২২) কে কল দিয়ে ভিকটিমকে মুক্তারপুর সিএনজি স্ট্যান্ডের পিছনে যাওয়ার জন্য বলতে বলে। তখন হামিম ভিকটিমকে সেখানে যেতে বলে। ঐদিন রাত্রি সাড়ে ৮টায় ভিকটিম মুন্সীগঞ্জ জেলার সদর থানাধীন মুক্তারপুর সিএনজি স্ট্যান্ডের পিছনে জোড় পুকুর পাড় মোতালেব মিয়ার বাড়ীর সামনে ফাঁকা জায়গায় গেলে পূর্ব পরিল্পিতভাবে ৩ ও ৪ নং আসামীসহ অজ্ঞাতনামা আরো কয়েকজন আসামী মিলে ভিকটিমকে এলোপাথারী মারধর করে ও লাঠি দিয়ে পিটায়। যাহাতে ভিকটিম বুকসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম প্রাপ্ত হয়। তখন ভিকটিম অচেতন হয়ে মাটিতে ঢলে পড়লে আসামীরা ভিকটিমকে মুক্তারপুর সিএনজি ষ্টেশনের সামনে রাস্তায় নিয়ে আসে তখন পথচারী লোকজন আসামীদের ভিকটিম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে, তারা তাদের অপরাধ গোপন করার জন্য ভিকটিমের মৃগি রোগ হয়েছে বলে জানায় এবং তড়িঘরি করে ভিকটিমের লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে একটি মিশুকে করে দশকানি বড় মসজিদের কাছে রাস্তায় রেখে পালিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন ভিকটিমকে দেখতে পেয়ে বাসায় খবর দিলে ১ নং ভিকটিমের স্ত্রী নুপুর (৩২) উক্ত স্থানে আসে এবং লোকজনের চাপে ভিকটিমকে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে যায়। অতঃপর মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার জানায় যে, ভিকটিম পূর্বেই মারা গেছে। মুন্সীগঞ্জ থানা পুলিশ ভিকটিমের মৃত দেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে এবং লাশ ময়না তদন্তের ব্যবস্থা করে। উক্ত সময়ে ১ নং আসামী নুপুর (৩২) অপমৃত্যু সংবাদ দিলে উক্ত বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ থানার অপমৃত্যু মামলা নং-৩৯/২৪, তাং-১৫/১০/২০২৪ রুজু হয়। ভিকটিম জাহিদুল মোল্লা (৪০), ০১ ও ০২ নং আসামীর পরকিয়া সম্পর্কে বাধা হওয়ার কারনে উক্ত আসামীদ্বয় ৩, ৪ নং আসামীসহ অজ্ঞাতনামা আরো অনেকের সাথে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে একই উদ্দেশ্যে ভিকটিমকে হত্যা করে। উক্ত ঘটনায় নিহতের বোন খাদিজা বেগম (২৯) বাদী হয়ে মুন্সিগঞ্জের সদর থানায় ভিকটিমের স্ত্রীসহ ৪ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।