কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিজেদের সমর্থন ব্যক্ত করেছেন জাতীয় পার্টি। বৃহস্পতিবার পার্টির নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ সমর্থন জানান।
কাজী ফিরোজ রশিদ বলেন, ছাত্রদের দাবি যৌক্তিক এবং আমরা তা সমর্থন করি। কারণ ছাত্ররা কোটার সম্পূর্ণ বাতিল চায়নি। তারা সংস্কার চেয়েছে। সরকারি চাকরির ৫৬ শতাংশ কোটার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে- এটা আমরাও মানতে পারি না। তাহলে মেধার মূল্যায়ন হয় না। ছাত্ররা চেয়েছে কোটা থাকবে। তবে তা বিশেষ ক্ষেত্রে এবং তার হার ৫ শতাংশের বেশি নয়। এসব বিষয় আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই মীমাংসা করা উচিৎ ছিল।
তিনি বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন করতে গিয়ে যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং পরিবার পরিজনদের সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।
জাতীয় পার্টির এ নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, কোটা যেখানে সরকারই বাতিল করেছিলেন সেটা হাইকোর্টের রায়ে বাতিল হলো। হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়েছে- কোটা থাকবে। তবে কোটার হার কমানো বা বাড়ানোর এখতিয়ার সরকারের হাতে থাকবে। ফলে রায় অনুসারেই সরকারের পক্ষে ছাত্রদের দাবি মেনে নেওয়ার সুযোগ আছে।
তিনি বলেন, সরকার আগের সিদ্ধান্ত এবং ছাত্রদের বর্তমান দাবির মধ্যে বিপরীতমুখিতা নেয়। সরকার এর আগে বাতিল করেছিলেন এবং ছাত্ররা এখন সংস্কার চেয়েছে। এ দু’য়ের মধ্যে সমন্বয় হওয়া সম্ভব ছিল। কিন্তু পরিস্থিতি ঘোলাটে করে ফেলা হয়েছে।
কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, সরকার হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন। এই পর্যায়ে অ্যাটর্নি জেনারেল সুপ্রিম কোটের শুনানি এগিয়ে নিয়ে এসে সমস্যার সমাধান করতে পারেন। তাই আমরা দাবি জানাব কোনোভাবে কালক্ষেপণ না করে আগামী রোববারই সুপ্রিম কোর্টে মেনশন করে- সিভিল আপিলটি দ্রুত শুনানি করা হোক। এজন্য এক মাস দেরি করতে হবে কেন? তাতে যদি আন্দোলন আরও বেগবান হয়- কিংবা যদি আরও প্রাণহানি ঘটে তার দায় দায়িত্ব কে নেবে?
তিনি বলেন, সাধারণ ছাত্রদের এই আন্দোলন দমন করতে ছাত্রলীগকে নামানো হলো কেন? এই সুযোগ নিয়ে অন্যান্য ছাত্র সংগঠনও কোটা সংস্কারের আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেছে। ফলে এতদিন যে আন্দোলন শান্তিপূর্ণ ছিল সেটা এখন সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। তাই আমরা দাবি জানাবো অবিলম্বে ছাত্রলীগকে ঘরে ফিরিয়ে নেওয়া হোক। অন্যথায় সহিংসতা এবং প্রাণহানি আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ার মিলন ও মহাসচিব কাজী মো. মামুনূর রশিদ। উপস্থিত ছিলেন শফিকুল ইসলাম সেন্টু, সাহিদুর রহমান টেপা, সুনীল শুভরায়, প্রেসিডিয়াম সদস্য শফিকুল ইসলাম শফিক, জাহাঙ্গীর আলম পাঠান, খন্দকার মনিরুজ্জামান টিটু, শাহ জামাল রানা, উপদেষ্টা হাফছা সুলতানা, ভাইস-চেয়ারম্যান শাহআলম তালুকদার, সারফু্দ্দিন আহমেদ শিপু, যুগ্ম-মহাসচিব ফখরুল আহসান শাহজাদা, শেখ মাসুক রহমান, অ্যাডভোকেট ছেরনিয়াবাত সেকান্দার আলী, এসএম হাশেম, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহনাজ পারভীন, মো. রিফাতুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক খোরশেদ আলম খুশু, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক নাজমুল খান, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক আকরাম আলী শাহীন, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান, যুগ্ম-সমবায় বিষয়ক সম্পাদক চিশতী খায়রুল আবরার শিশির, যুগ্ম-সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক তৌহিদুর রহমান, যুগ্ম-তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মো. ইদ্রিস আলী, কেন্দ্রীয় সদস্য আবু নাসের সিদ্দিকী।