নারায়ণগঞ্জে আলোচিত স্কুলছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার আজমেরী ওসমানের গাড়িচালক জামশেদ শেখকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শুনানি শেষে জামশেদ শেখকে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নুশরাত সাহারা বিথী জেলগেটে ৩ দিন জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আবদুর রশিদ।
এর আগে গত মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ৫ দিনের রিমান্ড শেষে দ্বিতীয় দফায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবারও ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে তাকে আদালতে পাঠানো হয়।
ওই দিন অসুস্থ থাকায় বৃহস্পতিবার রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করা হয়।
জামশেদ শেখ ত্বকী হত্যা মামলার প্রধান আসামি নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের প্রয়াত সংসদ সদস্য নাসিম ওসমানের ছেলে এবং নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের ভাতিজা আজমেরী ওসমানের গাড়ির চালক ছিলেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার ত্বকী হত্যা মামলার ধার্য তারিখে একই আদালতে হাজিরা দিয়েছেন এই মামলায় স্থায়ী জামিনে থাকা ইউসুফ হোসেন লিটন এবং তায়েব উদ্দিন জ্যাকি। এদের মধ্যে ইউসুফ হোসেন লিটন ত্বকী হত্যা মামলায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলেন।
এ ছাড়া ত্বকী হত্যা মামলায় গত ৮ থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গ্রেপ্তার বাকি ৪ আসামি সাফায়েত হোসেন শিপন, মামুন মিয়া, কাজল হাওলাদার এবং ইয়ার মোহাম্মদ পারভেজকেও এদিন আদালতে হাজির করা হয়। এই ৪ আসামি বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ কারাগারে রয়েছেন। এদের মধ্যে কাজল হাওলাদার গত ১৫ সেপ্টেম্বর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট প্রদীপ ঘোষ বাবু বলেন, বৃহস্পতিবার ছিল মামলার ধার্য তারিখ।
প্রতিটি তারিখেই মামলার তদন্ত সংস্থা র্যাবকে পরবর্তী তারিখে অভিযোগপত্র দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন আদালত। তবে দীর্ঘ সাড়ে ১১ বছর পর এই মামলাটি আবারো পুনরুজ্জীবিত হয়েছে। এখন আশা করা যায়, দ্রুততম সময়ের মধ্যে র্যাব তদন্ত শেষ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করবে।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ৬ই মার্চ বিকেল ৪টার দিকে নারায়ণগঞ্জ শহরের শায়েস্তা খান রোডের বাসা থেকে বেরিয়ে স্থানীয় সুধীজন পাঠাগারে যাওয়ার পথে নিখোঁজ হন এবিসি ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের শিক্ষার্থী তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী (১৭)। পরে ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনীর শাখা খাল থেকে ত্বকীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
ত্বকীর মরদেহ উদ্ধারের পর ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বি বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পরে ওই বছরের ১৮ মার্চ ত্বকী হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শামীম ওসমান, তার ছেলে অয়ন ওসমান, জেলা যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা জহিরুল ইসলাম পারভেজ ওরফে ক্যাঙারু পারভেজ, জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি রাজীব দাস, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান সুজন, সালেহ রহমান সীমান্ত ও রিফাত বিন ওসমানসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরো ৮-১০ জনের বিরুদ্ধে পুলিশ সুপারের কাছে সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেন ত্বকীর বাবা।