বাবার ওপর প্রতিশোধ নিতে ৭ বছরের শিশু মুস্তাকিনকে অপহরণ করে নির্মমভাবে হত্যা ও লাশ গুমের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ঘটনার ৭২ দিন পর দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা ও ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) সকালে ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলা থেকে নুর মোহাম্মদ ওরফে শাহ আলম (২০) এবং দুপুরে ফুলবাড়িয়া থেকে তানজিল (২৪) নামের দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ফতুল্লার লামাপাড়ায় তানজিলের বাসা থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত সুইচ গিয়ার উদ্ধার করা হয়।
জানা যায়, নিহত শিশুর বাবা হাশিম মিয়ার সঙ্গে তানজিলের এক মোবাইল ফোন নিয়ে বিরোধ হয়েছিল। সেই বিরোধের জের ধরে তানজিল ও তার সহযোগী নুর মোহাম্মদ শিশুটিকে অপহরণের পরিকল্পনা করে।
৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ফতুল্লার ডিআইটি মাঠ থেকে ৪৫০ টাকায় একটি সুইচ গিয়ার ছুরি কেনার পর তারা অপহরণ কার্যকর করে। প্রথমে শিশুটিকে ২০ টাকা দিয়ে প্রলুব্ধ করা হয়, এরপর চিপস কিনে দিয়ে অটোরিকশায় করে কেরানীগঞ্জের কাওটাইল এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে এক নির্জন ঝোপে নুর মোহাম্মদ শিশুটির মুখে কস্টটেপ পেঁচিয়ে মাটিতে শুইয়ে দেয়, এরপর তানজিল সুইচ গিয়ার দিয়ে একাধিকবার আঘাত করে শিশুটিকে হত্যা করে।
শিশুটি নিখোঁজ হওয়ার পরপরই তার পরিবার মাইকিং করে, এমনকি আসামিরাও প্রতারণামূলকভাবে মাইকিংয়ে অংশ নেয়। পরে শিশুটির বাবা হাশিম মিয়া ৬ জানুয়ারি ফতুল্লা মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপর ১৪ ফেব্রুয়ারি অপহরণ মামলা করেন।
অন্যদিকে, ১৮ জানুয়ারি কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ অজ্ঞাতনামা হিসেবে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে এবং দাফন সম্পন্ন করে। পরবর্তীতে পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে, এটি পূর্বপরিকল্পিত হত্যা।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) “ক” সার্কেল হাসিনুজ্জামান জানান, “শিশুটির বাবার সঙ্গে ব্যক্তিগত বিরোধের জের ধরে এই নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটে। প্রযুক্তিগত সহায়তায় আসামিদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে, তারা হত্যার দায় স্বীকার করেছে। নিহত শিশুর পরিবার থানায় গিয়ে জামাকাপড় দেখে পরিচয় নিশ্চিত করেছে।”