গত কয়েক দিন ধরে ডায়াবেটিসের নতুন রূপ টাইপ-৫ নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। নতুন ধরনের এই ডায়াবেটিস কেন হচ্ছে এবং এর প্রতিকার কী, তা নিয়েও মাথা ঘামাচ্ছিলেন গবেষকরা। এরই মাঝে খোঁজ পাওয়া গেল আরো এক ধরনের নতুন ডায়াবেটিসের। ডায়াবেটিসের নতুন এই রূপের নাম ‘ম্যাচুরিটি-অনসেট ডায়াবেটিস অফ দ্য ইয়ং’ (মোডি)।
শিশু ও কম বয়সীরাই বেশি আক্রান্ত হন এই রোগে। নবজাতকের শরীরেও দেখা দিতে পারে ডায়াবেটিসের নতুন এই রূপ। তবে গবেষকরা বলছেন অত্যন্ত বিরল এই রোগ বংশগত।
জিনের বিন্যাসের ওলটপালটেই দেখা দিতে পারে ‘মোডি’ ডায়াবেটিস, এমনটাই জানাচ্ছেন চেন্নাইয়ের মাদ্রাজ ডায়াবেটিস রিসার্চ ফাউন্ডেশনের (এমডিআরএফ) গবেষকরা।
শিশু ও কম বয়সীরাই বেশি আক্রান্ত হন এই রোগে। নবজাতকের শরীরেও দেখা দিতে পারে ডায়াবেটিসের নতুন এই রূপ। তবে গবেষকরা বলছেন অত্যন্ত বিরল এই রোগ বংশগত।
জিনের বিন্যাসের ওলটপালটেই দেখা দিতে পারে ‘মোডি’ ডায়াবেটিস, এমনটাই জানাচ্ছেন চেন্নাইয়ের মাদ্রাজ ডায়াবেটিস রিসার্চ ফাউন্ডেশনের (এমডিআরএফ) গবেষকরা।
তাদের সঙ্গে এই গবেষণায় যোগ দিয়েছেন আমেরিকার ‘ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিন’।
গবেষকরা দাবি করেছেন, ভারতেই মোডি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত অনেক শিশু ও কম বয়সীদের খোঁজ পাওয়া গেছে। কী থেকে এই ডায়াবেটিস হচ্ছে, কেনই বা হচ্ছে, এর প্রতিকারের উপায় নিয়ে নতুন করে গবেষণা শুরু হয়েছে।
আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশন থেকে প্রকাশিত ‘ডায়াবেটিস’ নামক মেডিক্যাল জার্নালে এই গবেষণা বিষয়ক একটি প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছে।
সেখানে ভারত ও আমেরিকার গবেষকরা দাবি করেছেন, ‘এবিসিসি৮’ নামক একটি জিনের বিন্যাসে গণ্ডগোল হলেই এই ডায়াবেটিস হতে পারে।
‘এবিসিসি৮’ জিনটি অগ্ন্যাশয় থেকে ইনসুলিন হরমোন ক্ষরণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। যদি কোনোভাবে জিনটিতে রাসায়নিক পরিবর্তন (মিউটেশন) ঘটতে থাকে, তাহলে সেটির কাজ করার প্রক্রিয়া বদলে যাবে। পরিবর্তন আসবে তার বিন্যাসেও। তখন শরীরের ভেতরের কোষগুলোই বিদ্রোহ করে ‘অটোইমিউন’ রোগের কারণ হয়ে উঠবে।
মোডি ডায়াবেটিস তেমনই একটি রোগ। একে ‘মোনোজেনিক ডায়াবেটিস’ বলেন অনেকে। খুব কমজনের এই রোগ হয়। আর তা বংশগতভাবে ছড়াতে থাকে।
এমডিআরএফের গবেষকরা জানিয়েছেন, রোগটি শৈশবেই প্রকাশ পায়। যেহেতু জিনের পরিবর্তনের কারণে এই ডায়াবেটিস হয়, তাই সেটির উপসর্গ টাইপ ১ ও টাইপ ২ ডায়াবেটিসের চেয়ে আলাদা। সে কারণে রোগটি ধরা পড়ে না সহজে।
এমনও দেখা গেছে, মা-বাবার থেকে বদলে যাওয়া জিন সন্তানের মধ্যে এসে এই বিরল রোগের কারণ হয়ে উঠেছে। শিশুর শরীরে যখন রোগটি দেখা দেয়, তখন রক্তে শর্করার মাত্রা আচমকাই কমতে থাকে। হাইপোগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণ দেখা দেয়, যাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় বলে ‘কনজেনিটাল হাইপারইনসুলিনিজ়ম’ (সিএইচআই)।
শিশুটির বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার রক্তে শর্করার মাত্রাও বাড়তে থাকবে। ৩০ বছর হওয়ার আগেই পরিস্থিতি উল্টে যাবে। তখন রক্তে শর্করার মাত্রা অতিরিক্ত পর্যায়ে চলে যাবে।
মোডি ডায়াবেটিসের আরো অনেক প্রকার রয়েছে, যেমন ‘মোডি ১’, ‘মোডি ৩’, ‘মোডি ১২’ ইত্যাদি। সবগুলো প্রকার নিয়ে গবেষণা চলছে। এখনো এই ডায়াবেটিসকে প্রতিরোধ করার মতো ওষুধ বা প্রতিষেধক তৈরি হয়নি।
গবেষকরা জানিয়েছেন, বিরল এই ডায়াবেটিসের চিকিৎসাপদ্ধতি ও ওষুধ নিয়ে গবেষণা চলছে।
সূত্র : আনন্দবাজার