সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি :
সিদ্ধিরগঞ্জে চাঁদাবাজী, ছিনতাইসহ অপরাধ কর্মকান্ডে বাঁধা দেয়ায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়েছে কিশোরগ্যাংয়ের সদস্যরা। রবিবার (১৩ এপ্রিল) দিবাগত রাত সাড়ে ৮টায় সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল রসুলবাগ এলাকায় এ হামলার ঘটনাটি ঘটে। এতে চারজন গুরুতর আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এসময় কিশোরগ্যাং সদস্যদের হামলায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ৮০ হাজার টাকার ক্ষতিসাধন এবং ক্যাশ বাক্স থেকে নগদ ১ লাখ টাকা চুরি হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আহতরা হলো, মো: জসিম মিয়া, মো: জাকির হোসেন, মনোয়ার হোসেন ও মো: জামান।
এ ঘটনায় রাতেই গোদনাইল রসুলবাগ এলাকার মৃত রওশন আলী বেপারীর ছেলে ভুক্তভোগী মো: জসিম মিয়া বাদি হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। তবে এ রিপোর্ট লেখার আগ পর্যন্ত হামলার সাথে জড়িত কিশোরগ্যাংয়ের সদস্যদের কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
অভিযুক্তরা হলো, গোদনাইল রসুলবাগ এলাকার মৃত দ্বীন ইসলামের ছেলে বাপ্পী (২৮), মুহিন ওরফে ট্যাপা (২৫), আবুল মিয়ার ছেলে তারেক (৩০), জাহাঙ্গীরের ছেলে রাজু (২৮), আলম মিয়ার ছেলে ইমান আলী (২২), স্বপন মিয়ার ছেলে সোহেব (২৫), নেওয়াজের ছেলে শুভ (২৫), হেলাল উদ্দিনের ছেলে নিজাম (২৬), সেলিম মিয়ার ছেলে শাহিন (৩০) ও মনির হোসেনের ছেলে শাওন (২৬)।
অভিযোগে বাদি উল্লেখ করেন, বিবাদীরা খুবই খারাপ ও সন্ত্রাসী প্রকৃতির। তারা এলাকায় চাঁদাবাজীসহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে বেড়ায়। তাদের ভয়ে এলাকায় কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায় না। আমিসহ এলাকাবাসী তাদের এমন কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদেরকে বিভিন্ন ভয়-ভীতি ও খুন জখমের হুমকি দিয়ে আসছিল। তারই জের ধরে রবিবার রাত সাড়ে ৮টায় গোদনাইল রসুলবাগ এলাকাস্থ আমার বড় ভাই জাকির হোসেনের মালিকানাধীন নিলা টেলিকম নামক দোকানে আমি ও বড় একত্রে বসে কথাবার্তা বলছিলাম। হঠাৎ তারা পূর্ব শত্রুতার জের ধরে লাঠিশোঠা, লোহার রড ও দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্রসহ আমার বড় ভাইয়ের দোকানের সামনে এসে কোন অজুহাত ছাড়াই আমাদের অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করতে থাকে। তখন আমি তাদেরকে গালা-গালি করতে নিষেধ করলে, তাদের সাথে আমার তর্কবিতর্ক হয় এবং একপর্যায়ে বিবাদী বাপ্পীর হুকুমে অন্যান্য বিবাদীরা আমার ভাইয়ের দোকানের ভিতরে প্রবেশ করিয়া আমাকে এলোপাথারীভাবে মারধর করে শরীরের বিভিন্নস্থানে জখম করে। তখন আমাকে উদ্ধারের জন্য বড় ভাই জাকির হোসেন এগিয়ে আসলে, বিবাদীরা তাহাকেও মারপিট করিয়া শরীরের বিভিন্নস্থানে জখম করে এবং মুহিনের হাতে থাকা ধারালো চাপাতি দ্বারা হত্যার উদ্দেশ্যে আমার ভাইয়ের মাখায় কোপ মারিলে, উক্ত কোপ লক্ষভ্রষ্ট হয়ে আমার ভাইয়ের বুকে লেগে কাটা গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়। তারপর আমাদের উদ্ধারের জন্য আমার বড় ভাই মনোয়ার হোসেন আগাইয়া আসিলে, বিবাদীরা তাকেও মারধর করে জখম করে এবং ৪নং বিবাদী রাজুর হাতে থাকা ধারালো রামদা দ্বারা হত্যার উদ্দেশ্যে আমার ভাইয়ের মাথায় কোপ মারিলে, উক্ত কোপ লক্ষভ্রষ্ট হয়ে আমার ভাইয়ের বাম হাতের বাহুতে লেগে গুরুতর কাটা রক্তাক্ত জখম হয়। এসময় আমাদের উদ্ধারের জন্য আমার চাচাতো ভাই জামান এগিয়ে আসলে, বিবাদীরা তাহাকেও মারধর করে শরীরের বিভিন্নস্থানে জখম করে এবং বিবাদী বাপ্পীর হাতে থাকা লোহার রড দ্বারা বারি মারলে জামানের বাম পায়ের কনুইয়ের নিচে লেগে গুরতর হাড়ভাঙ্গা জখম হয়।
এছাড়াও বিবাদীরা আমার ভাইয়ের দোকানের থাইগ্লাস, কাঁচের টেবিল, দরজাসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র এলোপাথারী ভাবে বাইরাইয়া ভাংচুর করায় অনুমানিক ৮০ টাকার ক্ষতি করে এবং তারা দোকানের ক্যাশ ব্যাক্সের মধ্যে রক্ষিত নগদ ১ লাখ টাকা কৌশলে চুরি করে নিয়া যায়। এসময় আমাদের ডাক-চিৎকারের শব্দ পেয়ে আশে-পাশের লোকজন এগিয়ে আসলে, হামলাকারীরা আমাদের হুমকি প্রদান করে যে, উক্ত ঘটনার বিষয়ে থানায় কোন মামলা বা অভিযোগ করিলে, তোকেসহ তোর পরিবারের লোকজনদের খুন করিয়া লাশ গুম করিয়া ফেলিব” বলিয়া চলিয়া যায়। তারপর স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আমরা নারায়ণগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি হইয়া চিকিৎসা গ্রহণ করি।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর আলম জানান, এ ঘটনায় অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।