ষ্টাফ রিপোর্টার
এনইপিসি এর কর্মকর্তা / কর্মচারীরা তাদের পাওনাদী পরিশোধ করার দাবীতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে।
শনিবার (১৯ জুলাই) দুপুর ১২ টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
সাবেক অপারেশন ম্যানেজার মো.মনিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন ,NEPC Consortium Power Limited (বিদেশী কোম্পানির মালিকানাধীন) – ১১০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন এই বহুজাতিক ভাসমান বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি (Haripur Commodore 1)১৯৯৯ সালে কাঁচপুরের হরিপুর এলাকায় স্থাপিত হয়। এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় আইপিপি (Independent Power Producer)। শুরু থেকেই এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি এদেশের দক্ষ ও অভিজ্ঞ জনবল দ্বারা (খ্যাতি এবং চমৎকার লাভের সাথে) পরিচালিত হয়ে আসছিল। ২০১৯ সালে বাংলাদেশ সরকারের সাথে *বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি*( *PPA* ) শেষ হওয়ার পর বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। *বাংলাদেশ শ্রম আইন (2006 section 132)* অনুযায়ী শ্রমিকদের ৫% প্রফিট বোনাস দেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও, কোম্পানিটি আজ পর্যন্ত আমাদের সে প্রাপ্য পরিশোধ করেনি।
আমরা আজ এখানে উপস্থিত হয়েছি এক ন্যায্য দাবি ও দীর্ঘদিনের বঞ্চনার বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবাদ জানাতে।
NEPC Consortium Power Limited গত প্রায় দুই দশক ধরে বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনা করেছে এবং আমাদের ১৮৬ জন শ্রমিকের সততা, নিষ্ঠা, দক্ষতা এবং অক্লান্ত পরিশ্রমের উপর ভর করে তারা এই দেশে মুনাফা অর্জন করেছে।
কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে, শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রমিকদের প্রাপ্য ৫% প্রফিট বোনাসের টাকা পরিশোধ না করেই কোম্পানিটি তাদের একমাত্র স্থায়ী সম্পদ — ১১০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বার্জ মাউন্টেড পাওয়ার প্ল্যান্ট — বিক্রি করে দেশ ত্যাগের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
আমরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে চাই, লেবার কোর্ট ( *B. L. A. Wages Suit No. 558/2014* ) আমাদের পক্ষে চূড়ান্ত রায় ( *24.11.2019* ) দিলেও, NEPC কর্তৃপক্ষ সেই রায়কে অগ্রাহ্য করেছে। তারা আদালতের রায়কে অবজ্ঞা করে দেশের সম্পদ বিক্রি করছে, যা একদিকে আইন লঙ্ঘন, অন্যদিকে শ্রমিকদের প্রতি চরম অন্যায়।
আমরা মনে করি, কোম্পানিটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর আমাদের অনেক সহকর্মী হতাশাগ্রস্ত হয়ে দুঃখজনকভাবে মৃত্যুবরণ করেছেন এবং অনেকেই আজও বেকার অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এই শ্রমিকদের বঞ্চিত করে কোম্পানির সম্পদ বিক্রি করে চলে যাওয়াটা অত্যন্ত অমানবিক এবং একটি জঘন্য সামাজিক ও আইনগত অপরাধ বলে আমরা মনে করি।
শ্রমিকের ঘাম শুকানোর আগেই তার প্রাপ্য মজুরি পরিশোধ করা উচিত।কিন্তু আমাদের শ্রমের প্রাপ্য অর্থ আটকে রেখে কোম্পানিটি গোপনে তার সম্পদ সরিয়ে নিচ্ছে — যা আমাদের ন্যায্য অধিকার হরণের শামিল।
আমরা আজকের এই শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনের মাধ্যমে প্রশাসনের সর্বোচ্চ মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি:
যতক্ষণ না NEPC তাদের শ্রমিকদের প্রাপ্য ৫% প্রফিট বোনাস পরিশোধ করছে, ততক্ষণ তাদেরকে বার্জ বিক্রি করে দেশ ছাড়ার অনুমতি দেয়া যাবে না।
আমরা আশা করি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন এবং শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন, সাবেক অপারেশন ম্যানেজার মো.আহসান হাবিব,সাবেক শিফট চার্জ ইঞ্জিনিয়ার মো.ওয়াহিদুজ্জামান খান,আনোয়ারুল কাদের,এক্স মেইনটেনেন্স সুপারভাইজিং ইঞ্জিনিয়ার মো.আবদুর রহিমসহ অন্যান্য কর্মকর্তবৃন্দ।