জাগো নারায়ণগঞ্জ:
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার দাপা ইদ্রাকপুর শাহজাহান রোলিং মিল সংলগ্ন খা বাড়ির পাশে রাজউকের অনুমোদন বিহীন নির্মানাধীন ভবনের ৪র্থ তলা হতে পড়ে নির্মাণ শ্রমিক ইসমাইলের মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটনা ঘটলেও ভবন মালিক থানায় মামলা করতে দেয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা যায়, ভবন মালিক মোহাম্মদ বাহাদুর আলী আকন্দ নিহতের স্বজনদের নানান ভূল তথ্য দিয়ে লাশ তড়িঘড়ি দাফন করতে বাধ্য করেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে গত ১৫ই মে দুপুর ১২ টার ফতুল্লার শাহজাহান রি রোলিং সংলগ্ন খা বাড়ি এলাকায় বাহাদুর আলী আকন্দের নির্মানাধীন ভবনে।
এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, কাগজে-কলমে সোয়া ২ শতাংশ জমি লেখা থাকলেও বাস্তবে দেড় শতাংশ জমির উপর রাজউকের অনুমোদন না নিয়ে বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন শাহজাহান রোলিং মিল সংলগ্ন খা বাড়ি এলাকার বাসিন্দা বজলার রহমান আকন্দের পুত্র মোহাম্মদ বাহাদুর আলী আকন্দ।
রাজউকের ভবন নির্মাণ আইন অনুযায়ী চারদিকে নিরাপত্তার বেষ্টনী দিয়ে ভবন নির্মাণ কাজ করার কথা থাকলেও মোহাম্মদ বাহাদুর আলী আকন্দ সে আইনের ধারে কাছে না গিয়ে নিজের ইচ্ছামত ভবন নির্মাণ করতে থাকেন। এমনকি পার্শ্ববর্তী বাড়ির মালিকগণ চতুর্দিকে কিছু জমি ছেড়ে নিরাপত্তা বেষ্টনে দিয়ে ভবন নির্মাণ করতে বললে কর্নপাত করেননি। ফলে নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানার রফিকপুর গ্রামের বর্তমান সেহারচর সামাদ মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া নির্মাণ শ্রমিক ইসমাইলকে অকালে প্রাণ দিতে হলো। রাজউকের অনুমোদন বিহীন নির্মানাধীন ভবনের ঠিকাধারী কাজ করছিলেন আব্দুল মালেক।
বাড়ির মালিক বাহাদুর আলী আকন্দ ফতুল্লা পাইলট স্কুলের শিক্ষক এবং স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলের কয়েকজন নেতার নাম ব্যবহার করে নিজের ইচ্ছা মত ভবন নির্মাণ কাজ অব্যাহত রেখেছে। এমনকি রাজউককে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাতে কার্পন্য বোধ করেনি।
অপরদিকে নির্মাণ শ্রমিক ইসমাইলের মৃত্যু হলেও তার পরিবারের সদস্যদের মামলার পরিবর্তে প্রথমে ৫০ হাজার টাকা দিতে চায় বাড়ির মালিক আকন্দ। তিনি উক্ত টাকার এক টাকাও বেশী দিতে পারবেনা বলে সাফ জানিয়ে দেন নিহতের স্বজনদের। পরে ফতুল্লা ইউপির সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার উম্মে তাহেরা আখি ও কুতুবপুর ইউপির ৯নং ওয়ার্ড মেম্বার রঞ্জু মেম্বারকে দিয়ে ১ লক্ষ টাকা দিতে রাজি হয় বাড়ির মালিক আকন্দ। এর পর নিহতের পরিবারের লোকজনকে উল্টাপাল্টা বুঝিয়ে মামলা দায়ের করতে বাধাঁ দেন।
ঈসমাইলের মৃত্যুর ক্ষতিপূরন বাবদ ১ লক্ষ টাকার একটি চেক দিলেও সে টাকা এখনো পর্যন্ত তুলতে পারেনি নিহত শ্রমিক ইসমাইলের পরিবার।
অপরদিকে রাজউকের অনুমোদনবিহীন দেড় শতাংশের উপর পাঁচতলা ভবনের চতুর্থ তলার ছাদ নির্মাণ কাজ করতে গিয়ে সেখান থেকে পড়ে নির্মাণ শ্রমিক ইসমাইল ঘটনা স্থলে মারা যান। পরে খানপুর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক ইসমাইলকে মৃত ঘোষণা করেন। ঠিকারাদার আব্দুল মালেক মুঠোফোনে জানান,নিচতলায় নিরাপত্তা বেষ্টনী দিছি। উপরে দিতে বলেছিলাম মিস্ত্রিরা না দিয়ে উপরে কাজ করছে।
সচেতন মহলের দাবি রাজউকের অনুমোদনবিহীন ভবন নির্মাণ করায় যেকোনো সময় অঘটন ঘটে যেতে পারে।
ঘটনাস্থলে যাওয়া ফতুল্লা মডেল থানার উপপরিদর্শক সঞ্জয় মালো জানান,নিহতের পরিবার যদি মামলা না করেন তাহলে সেক্ষেত্রে পুলিশের কিছুই করার থাকেনা।
এ ব্যাপারে ভবন মালিক বাহাদুর আলী আকন্দের ০১৭১২২১৪২@@ মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেয়া হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনে রাজউক কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন সচেতন মহল।