নারায়ণগঞ্জ সোমবার | ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
  সর্বশেষঃ
রেলওয়ের জায়গা দখল করে শ্রমিকদল নেতা সফির ঘর নির্মাণ!
অসুস্থ বিএনপি নেতা অধ্যাপক মনিরুল ইসলামকে দেখতে গেলেন মুহাম্মদ সাদরিল
ইসলামপুরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার বিক্ষোভ সমাবেশ
নারায়ণগঞ্জ রেলওয়ে মানেই চাঁদাবাজীর অভয়ারন্য!
বকশীগঞ্জে রফিক ফাউন্ডেশনের শীতবস্ত্র বিতরণ
বাংলাদেশে হিন্দুদের জন্য কতদূর কী করার আছে ভারতের?
“সারাদেশে ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে ছাত্র ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ কলেজ শাখার মানববন্ধন”
আমতলীর ইউএনওর বদলীর আদেশ প্রত্যাহারের দাবীতে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন!
আমতলীতে স্ত্রী হত্যার অভিযোগ, গলায় ফাঁস লাগিয়ে স্বামীর আত্মহত্যার নাটক!
জনগণের রক্ত নিয়ে যারা হোলি খেলেছে তাদেরকে ক্ষমতায় দেখতে চাই না -মুফতি মাসুম বিল্লাহ
ইসলামপুর মোটর সাইকেল সংঘর্ষে কিশোরের মৃত্যু আহত দুই
সোনারগাঁয়ে ফেন্সিডিলসহ আটক-১
সোনারগাঁয়ে ৪ কেজি গাঁজাসহ গ্রেফতার-১ 
আমতলীতে খাবারের লোভ দেখিয়ে প্রতিবন্ধি শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ!
ফতুল্লায় গাড়ী চোর চক্রের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার
হাসিনা-টিউলিপের রাশিয়া সফর ও ৪ বিলিয়ন পাউন্ড ঘুস
বিডিআর হত্যাকাণ্ড: ট্রাইবুনালে হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের
ভয়ংকর যেসব মাদকে আসক্ত তিশা টয়া সাফা ও সুনিধি
বিজয় দিবস উপলক্ষে জাগরনী ক্রীড়াচক্র ক্লাবের আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরন
নারায়ণগঞ্জ বধির উন্নয়ন সংস্থার পক্ষে বিজয় দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি
আমতলীতে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস পালিত
আমতলীতে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এতিম শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা
আমতলিতে বিক্রি কালে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে টিয়াপাখী ও সাপ অবমুক্ত
সোনারগাঁয়ে মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচির আওতায় ২ দিনের প্রশিক্ষণ কর্মশালা
সোনারগাঁয়ে বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার-৬
বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া সীমান্ত হত‌্যাকান্ডে ছিনতাইকারী অ‌নিক গ্রেপ্তার
আলীরটেক ইউনিয়নের ডিক্রিরচর গুদারাঘাটে আরসিসি র‌্যাম নির্মাণ কাজ সম্পন্ন
নিষিদ্ধ সংগঠন রাতের আধারে ঝটিকা মিছিলের প্রতিবাদে ইসলামপুরে বিএনপির বিক্ষোভ
কুতুব আইল শতদল সমাজ কল্যাণ সংঘের উদ্যোগে বিজয় দিবস পালন
রূপগঞ্জে পূর্বাচল লেকে সুজানার পর মিলল শাহিনুরের লাশ
Next
Prev
প্রচ্ছদ
আল-জাজিরার প্রতিবেদনে উঠে এল আয়না ঘরের বর্ণনা?

আল-জাজিরার প্রতিবেদনে উঠে এল আয়না ঘরের বর্ণনা?

প্রকাশিতঃ

ষ্টাফ রির্পোটার:
‘কোনো জানালা ছিল না। সময় বোঝার কোনো উপায় ছিল না। এটি দিন না রাত আমি তা বুঝতাম না। আমি একটি অন্ধকার বদ্ধ ঘরে ছিলাম। যখন আলো জ্বালানো হতো তখন আমার পক্ষে সঠিকভাবে দেখা সম্ভব হতো না। কারণ এটি খুব উজ্জ্বল ছিল।’ ৪৫ বছর বয়সী মাইকেল চাকমা এভাবেই বলেন, ‘অধিকাংশ সময় আমাকে হাতকড়া এবং শিকল পরিয়ে রাখা হতো।’
মাইকেল চাকমা একজন বাংলাদেশি আদিবাসী অধিকারকর্মী। দেশের সামরিক গোয়েন্দা পরিচালিত একটি গোপন কারাগারে তার পাঁচ বছর কেটেছে, যেখানে বন্দিত্বের প্রতিটি দিন ছিল বেদনাদায়ক। সীমাহীন হতাশায় ভরা।
অধিকার নামে একটি এনজিওর তথ্যমতে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে (২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের জুলাই পর্যন্ত) বাংলাদেশি ওই গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষ জোর করে শীর্ষস্থানীয় বিরোধী ব্যক্তিত্ব এবং অধিকারকর্মীসহ অন্তত ৭০০ জনকে এভাবে বন্দী করে রাখে, যাদের একজন ছিলেন মাইকেল চাকমা। .তাদের মধ্যে ৮৩ জনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে, যাদের মধ্যে কেউ কেউ নিরাপত্তা বাহিনীর কথিত ‘ক্রসফায়ারে’ নিহত হয়েছেন। এখনও ১৫০ জনের বেশি নিখোঁজ রয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের নেতৃত্বে লাখ লাখ বাংলাদেশি শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির দাবিতে দেশব্যাপী আন্দোলন শুরু করার পর তিনি পদত্যাগ করে প্রতিবেশী দেশ ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।
দেশের একমাত্র নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তবর্তী সরকার দায়িত্ব প্রহণ করে এবং ২৯ আগস্ট নিখোঁজের তদন্তের জন্য হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতির নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি কমিশন গঠন করে।
ভেবেছিল আমাকে মেরে ফেলবে
মাইকেল চাকমাকে ২০১৯ সালের এপ্রিল রাজধানী ঢাকার কাছে সশস্ত্র লোকেরা তুলে নিয়েছিল বলে অভিযোগ। বাংলাদেশের আদিবাসী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় চাকমাদের বিষয়ে হাসিনা সরকারের নীতির সমালোচনা করার জন্য তাকে তুলে নেওয়া হয় বলে ধারণা। চাকমারা দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাস করে।
চাকমারা বেশির ভাগই বৌদ্ধ। কয়েক দশক ধরে তারা পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে বাঙালি বসতি স্থাপনকারীদের বিরুদ্ধে জমি দখলের প্রতিরোধ করে আসছে। জরিপে দেখা যায়, পার্বত্য চট্টগ্রামে চাকমা জনসংখ্যা ১৯৫০ সালে ৯১ শতাংশ থেকে ১৯৯১ সালে ৫১ শতাংশে নেমে আসে। কারণ পরবর্তী সরকারগুলো বসতি স্থাপনকারীদের সমর্থন করে, যা ১৯৮০-এর দশকে চাকমাদের নেতৃত্বে বিদ্রোহ পরিচালনা করে। বিদ্রোহের প্রতি ঢাকার সামরিক প্রতিক্রিয়ায় চাকমাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘন দেখা যায়, যার মধ্যে ব্যাপক গ্রেপ্তার, নির্যাতন, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুম রয়েছে।
১৯৯৭ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার প্রথম মেয়াদে শেখ হাসিনা পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষর করেন, যা তাদের জমির উপর চাকমাদের অধিকারকে স্বীকৃতি দেয়, তাদের আরও স্বায়ত্তশাসনের প্রতিশ্রুতি দেয় এবং কয়েক দশক ধরে চলা বিদ্রোহের অবসান ঘটায়। হাসিনা আওয়ামী লীগ দল একে একটি যুগান্তকারী চুক্তি বলে উল্লেখ করে থাকে।
কিন্তু চাকমাদের অনেকে ১৯৯৭ সালের ওই চুক্তির সমালোচনা করতে থাকেন, প্রধানত পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে সেনাবাহিনীর চলমান উপস্থিতির জন্য।
মাইকেল চাকমা বলেন, ‘আমাকে জিজ্ঞাসাবাদকারীরা বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির সমালোচনা করা রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল। আওয়ামী লীগ বা শেখ হাসিনার কর্মকান্ডের সমালোচনা করা উচিত নয়।’ তিনি বলেন, ‘পাঁচ বছর ধরে বাইরে কী ঘটছে সে সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা ছিল না। কারাগারের রক্ষীরা আমাদের কখনোই বলেনি দিন না রাত।’
তবে গত মাসে হঠাৎ মাইকেল চাকমাকে তার সেল থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। কেন তিনি তা জানতেন না। ‘আমি আতঙ্কিত ছিলাম। আমি ভেবেছিলাম তারা আমাকে মেরে ফেলবে,’ তিনি বলেন।
তাকে চোখ বেঁধে একটি গাড়িতে রাখা হয়েছিল এবং সারা রাত সেই গাড়ি চালানো হয়েছিল। মাইকেল চাকমার ভাষায়, ‘আমি নিজেকে ফিসফিস করে বলছি: ওরা আমাকে মেরে ফেলবে, ওরা আমাকে মেরে ফেলবে। আমি ভেবেছিলাম তারা আমাকে একটি খোলা জায়গায় হত্যা করবে। কিন্তু গাড়িটি গভীর রাতে একটি জঙ্গলে থামে এবং আমি একটি কণ্ঠ শুনতে পেলাম: তুমি মুক্ত। তারা আমাকে আরও আধ ঘণ্টার জন্য আমার চোখ না খোলার জন্য নির্দেশ দিয়েছিল।’
অবশেষে তিনি যখন চোখ খুললেন, নিজেকে একটি সেগুনবাগানে দেখতে পেলেন। তার ভাষায়, ‘আমি অসাড় বোধ করি এবং অন্ধকারে ঘুরে বেড়াই। কারণ আমার অবস্থান সম্পর্কে আমি অনিশ্চিত। পরে একটি সাইনপোস্ট দেখতে পাই যেখানে লেখা ছিল: চট্টগ্রাম বন বিভাগ।’
তিনি কোথায় আছেন তা বুঝতে পেরে মহাসড়কে যান এবং একটি গাড়িতে চড়তে সক্ষম হন। তিনি বলেন, ‘আমি বাড়িতে পৌঁছলাম। আমার ভাইবোনদের সাথে পুনরায় মিলিত হলাম। এটি একটি অবিশ্বাস্যভাবে আবেগপূর্ণ মুহূর্ত ছিল।’
আয়না ঘর
হাসিনার পতনের পর মাইকেল চাকমাসহ অন্তত তিনজন গুমের শিকার ব্যক্তি তাদের পরিবারের কাছে ফিরে গেছেন। বাকি দুইজনের একজন হলেন জামায়াত-ই-ইসলামির বিশিষ্ট নেতা গোলাম আযমের ছেলে প্রাক্তন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহিল আমান আজমি।
আরেকজন হলেন জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর ছোট ছেলে আর মীর আহমদ বিন কাসেম।
মাইকেল চাকমা, আজমি ও বিন কাসেমকে সামরিক গোয়েন্দা পরিচালিত গোপন কারাগার কুখ্যাত আয়না ঘরে আটক করা হয়েছিল। এই কারাগারগুলোর খবর ২০২২ সালে প্রথম প্রকাশিত হয় যখন সুইডেন-ভিত্তিক একটি অনুসন্ধানী ওয়েবসাইট দুইজন প্রাক্তন বন্দির সাক্ষাৎকার প্রকাশ করে।
এই বন্দীদের আরেকজন হলেন সাবেক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাসিনুর রহমান, যিনি দুই বছর গোপন কারাগারে কাটিয়েছেন। তার ভাষায়, ‘আমাকে আমার সামাজিক মিডিয়ায় পোস্টের জন্য আটক করা হয়েছিল। আমি হাসিনা সরকারের দুর্নীতি ও সহিংসতার কঠোর সমালোচনা করেছিলাম।’
‘এটি শুধু একটি জায়গায় নয়। বেশ কয়েকটি গোপন কারাগার রয়েছে যা সম্মিলিতভাবে আয়নাঘর নামে পরিচিত। এগুলি মূলত উচ্চ-মূল্যের রাজনৈতিক এবং অন্যান্য বন্দীদের রাখার জন্য।’
অসলো বিশ্ববিদ্যালয়ের কালচারাল স্টাডিজ বিভাগের গবেষক মোবাশ্বর হাসানকে ২০১৭ সালে ঢাকা থেকে অপহরণের পর ৪৪ দিন একই কারাগারে রাখা হয়েছিল। তিনি বলেছিলেন, ‘গোপন ঘরগুলো সর্ম্পূনরুপে কার্যকর কারাগারের মতো কাজ করে। গোপন কারাগারে এমনকি চিকিৎসা সুবিধাও ছিল। আমাদের নিয়মিত ডাক্তাররা পরীক্ষা করতেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাকে অপহরণ ও আটকের বিষয়ে নীরব থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারা স্পষ্ট এবং সরাসরি হুমকি দিয়েছে: চুপ না থাকলে তারা শুধু আমাকে আবার অপহরণ করবে না, তারা আমার পরিবারের সদস্যদেরও ক্ষতি করবে।’
ভাগ্যবান যে আমি বেঁচে আছি
কাসেম নামে একজন আইনজীবীকে ২০১৬ সালে সাদা পোশাকের পুলিশ তুলে নিয়ে যায় এবং একটি জানালাবিহীন রুমে আটকে রাখে। তিনি বলেছেন, ‘আমরা শালীন খাবার পেয়েছি, যা আমাদের বাঁচিয়ে রাখার জন্য যথেষ্ট। এর বেশি কিছু নয়, কম কিছু নয়। ছোট ছোট কথাবার্তা, শুভেচ্ছা এবং অনুরোধের মাধ্যমে কারারক্ষীদের সাথে সংযোগ স্থাপনের জন্য প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, আমাকে জানানো হয়েছিল যে, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আমাদের বহির্বিশ্ব সম্পর্কে কোনো তথ্য শেয়ার করতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছে। আমি রক্ষীদের কাছে সময় চাইতাম যাতে আমি প্রার্থনা করতে পারি, কিন্তু তারা কখনও উত্তর দেয়নি। মাঝে মাঝে, আমি আমার সেলের বাইরে অস্পষ্ট কণ্ঠস্বর এবং চিৎকার শুনতে পেতাম। ধীরে ধীরে আমি বুঝতে পারি, আমার মত আরও বন্দী আছে।‘
চাকমার মতো বিন কাসেমকেও একই কায়দায় ছেড়ে দেওয়া হয়। তাকে ঢাকার একটি মহাসড়কের কাছে নামিয়ে দেওয়া হয়, যেখান থেকে তিনি এক ঘণ্টা হেঁটেছিলেন যতক্ষণ না তিনি একটি দাতব্য ক্লিনিকে যেতে পেরেছিলেন। তার বাবা এই ক্লিনিকের ট্রাস্টি ছিলেন।
ক্লিনিকের একজন স্টাফ সদস্য তাকে চিনতে পেরেছিলেন এবং দ্রুত তার পরিবারকে জানিয়েছিলেন। তারা তার সাথে পুনরায় মিলিত হতে ছুটে যায়। বিন কাসেশ বলেন, ‘আমি ভাগ্যবান বোধ করছি যে আমি বেঁচে আছি। কারাগারের ভিতরে আমি আমার প্রিয়জনকে আবার দেখার আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম। পরিস্থিতি এতটাই অমানবিক ছিল যে, এটি আশার অনুভূতি কেড়ে নিয়েছিল। আমাদের মনে হচ্ছিল আমরা মৃতদেহের মতো বেঁচে আছি।’
বিন কাসেমের মা আয়েশা খাতুনের ভাষায়, ‘আট বছর ধরে আমরা অনিশ্চয়তার মধ্যে ছিলাম। আরমান [কাসেমের ডাকনাম] বেঁচে আছে কিনা আমাদের কোনো ধারণা ছিল না। সেই অস্থিরতার প্রতিটি মুহূর্ত অনন্তকালের মতো অনুভূত হয়েছিল।’
কাসেমের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার এবং তাদের দুই মেয়ের সেদিনের কথা মনে আছে যখন একদল লোক তাদের ঢাকার অ্যাপার্টমেন্টে ঢুকেছিল এবং কাসেমকে তাদের সাথে যেতে বলেছিল।
তাহমিনা বলেন, ‘আমাদের মেয়েরা কাঁদছিল এবং তাদের বাবার জামাকাপড় জড়িয়ে ধরেছিল। আগামী আট বছর তিনি নিখোঁজ হবেন তা আমরা কল্পনাও করিনি। প্রিয়জন কোথায় তা না জানার যন্ত্রণা বর্ণনা করা যায় না।’
গত মাসে যখন আয়েশা তার ছেলের সাথে পুনরায় মিলিত হয়েছিলেন তখন তিনি বলেন, ‘এটি পরাবাস্তব মনে হয়েছিল। এটি একটি স্বপ্নের মতো অনুভূত হয়েছিল, এবং কিছু সময়ের জন্য আমি নিশ্চিত ছিলাম না এটি সত্যি কিনা।’
গুরুতর অন্যায়
গুম ব্যক্তিদের অনেকের পরিবার তাদের স্বজনদের জন্য এখনও অপেক্ষায় রয়েছে। গত ১০ আগস্ট গুম প্রতিরোধে নিবেদিত একটি অধিকার গোষ্ঠী মায়ের ডাক ১৫৮ জন নিখোঁজ ব্যক্তির তালিকা জমা দিয়েছে সামরিক গোয়েন্দা সদর দপ্তরে (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স ডিজিএফআই)।
এখনও নিখোঁজদের মধ্যে আছেন আতাউর রহমান, বিএনপির সদস্য, যিনি ২০১১ সালে ঢাকা থেকে অপহৃত হন। তার স্ত্রী নাদিরা সুলতানা এবং তাদের সন্তানরা তার ফিরে আসার অপেক্ষায় রয়েছে।
গত ১১ আগস্ট ঢাকায় ডিজিএফআই সদর দফতরের বাইরে স্বজনদের তথ্যের দাবিতে বিক্ষোভ করে নিখোঁজদের পরিবারের সদস্যরা। তাদের সঙ্গে যোগ দেন নাদিরা সুলতানা। তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ে এখনও বিশ্বাস করে তার বাবা বেঁচে আছেন। আমি তাকে বলেছিলাম, আমি তাকে ফিরিয়ে আনব।’ নাদিরা বলেন, ‘আমার সন্তানরা তাদের বাবাকে ফিরে পেতে চায় এবং আমি আমার স্বামীকে ফিরে পেতে চাই।’
গত সপ্তাহে ইউনূসের নতৃত্বাধীন অন্তবর্তী সরকার গুম সমস্যার সমাধানে একটি আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ কনভেনশনে যোগদানে স্বাক্ষর করেছে।
মায়ের ডাকের সমন্ময়ক সানজিদা ইসলাম তুলি হাসিনার দীর্ঘ শাসনামলে গুম সমস্যা সমাধানে সরকারের সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘এই গুরুতর অন্যায়ের বিস্তারিত অবশ্যই উন্মোচন এবং বিচার করতে হবে। অনেক পরিবার এখনও তাদের প্রিয়জনের ফিরে আসার অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের প্রিয়জনকে ফিরে পাওয়ার অধিকার আছে।’

এ সম্পর্কিত আরো খবর

উপদেষ্টা মন্ডলীঃ

ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম

সম্পাদক মন্ডলীঃ

মোঃ শহীদুল্লাহ রাসেল

প্রধান নির্বাহীঃ

মোঃ রফিকুল্লাহ রিপন

সতর্কীকরণঃ

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি
অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও
প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
সকল স্বত্ব
www.jagonarayanganj24.com
কর্তৃক সংরক্ষিত
Copyright © 2024

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ

বনানী সিনেমা হল মার্কেট
পঞ্চবটী ফতুল্লা, নারায়ণগঞ্জ
ফোন নম্বরঃ ০১৯২১৩৮৮৭৯১, ০১৯৭৬৫৪১৩১৮
ইমেইলঃ jagonarayanganj24@gmail.com

Website Design & Developed By
MD Fahim Haque
<Power Coder/>
www.mdfahim.com
Web Solution – Since 2009

error: Content is protected !!